সংবাদ শিরোনাম :
শ্রীমঙ্গলে ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার বন্যায় ক্ষতিগস্থ মানুষের পাশে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব ও সারথী ট্রান্সপোর্ট সিলেট সিটি প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি বাবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাগর ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে শ্রীমঙ্গল সিরাজনগর দরবার শরীফের আয়োজনে বিশাল জশনে জুলুস সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন মৌলভীবাজারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) পালিত গোলাপগঞ্জে অস্ত্র সহ যুবক আটক শ্রীমঙ্গলে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা- শ্রমিক ফেডারেশন বিক্ষোভ সমাবেশ দুর্নীতির খবর পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কাশিমপুর কারাগার থেকে পলাতক আসামি র‌্যাবের হাতে আটক
রিক্সাচালক থেকে জুয়ারী কাশেম এখন কোটিপতি

রিক্সাচালক থেকে জুয়ারী কাশেম এখন কোটিপতি

 

এ এ রানা ::
এক সময়ের রিক্সাচালক আবুল কাশেম এখন কোটিপতি। তিনি নগরীর দক্ষিণ সুরমার অন্ধকার রাজ্যের রাজা। অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানা হিসেবে পরিচিত সুরমা মহলের কর্ণধার।

সিলেটের অন্ধকার জগতের নিয়ন্ত্রক এই কাশেম একাধারে শীর্ষ জুয়ারী, মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারীদের গডফাদার। তার এসব অপরাধ নির্বিঘ্ন করতে গড়ে তুলেছেন জুয়া-মাদকের নিরাপদ আস্তানা “সুরমা মহল” নামক পাপরাজ্যে।
কাশেমের পরিচয় ঃ
দক্ষিণ সুরমার জিঞ্জিরশাহ মাজার সংলগ্ন সাধুরবাজার বাশপালা মার্কেটে রেলওয়ের জমি লিজ নিয়ে অপরাধী কাশেম স্বপরিবারে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন যাবৎ।

একই স্থানে দীর্ঘদিন বসবাস করার ফলে স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কিছু চিহ্নিত অপরাধী এবং প্রভাবশালী পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে জড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে।

তার অনৈতিক অপরাধ নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয়রা যাতে বাধাঁ দিতে না পারে সেজন্য স্থানীয় কিছু অপরাধীদের শেল্টারদাতা হিসেবে ব্যবহার করছেন। বর্তমানে আবুল কাশেম ও তার মেয়ে জেসমিন দক্ষিণ সুরমার শীর্ষ জুয়ারী, মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারীদের আশ্রয়দাতা। যাহা সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনায় তা প্রমাণিত। যেমন মাদক ব্যবসায়ী পাক্কিকে জেল থেকে বের করা, সুরমা মহল আস্তানার পিছন থেকে চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার, ছিনতাকারী যারা আটক হয়েছে তারা সবাই কাশেমের জুয়ার বোর্ডের সদস্য। এসব ঘটনা এখন দক্ষিণ সুরমার আনাচে কানাছে আলোচিত হচ্ছ। এত কিছুর পরও পুলিশ কাশেম ও জেসমিনকে আটক না করায় স্থানীয়রা হলি সিলেট’র কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন কাশেম-জেসমিনের খুঁটির জোর কোথায়।

হলি সিলেট’র অনুসন্ধানে জানাযায় আবুল কাশেম ১৯৯৭-৯৮ইং সালে নোয়াখালী থেকে স্বপরিবারে সিলেট আসেন। আসার পর একটি কলোনীতে ভাড়াটে হিসেবে উঠেন। জিবীকা নির্বাহ করার জন্য রিক্সা চালানো শুরু করেন। রিক্সা চালিয়ে ৬ সদস্যের পরিবার চালানো কঠিন হয়েযায় কাশেমের, তিনি রিক্সা চালানোর পাশাপাশি টুকাইয়ের মতো ভাংঙ্গারী কুড়ানো ও বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু এসব করে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবার চলেনা এভাবে চলেযায় দুইবছর। পরিবার সচল রাখতে উপায় না পেয়ে কাশেমের স্ত্রী বাসা বাড়িতে জি এর কাজ শুরু করেন, এদিকে কাশেম ভাংঙ্গারী কুড়ানো বাদ দিয়ে ভাংঙ্গারী ব্যবসা শুরু করেন, পাশাপাশি রিক্সা চালানো বন্ধ করে বেবিট্যাক্সি চালানো শুরু করেন এখন তাদের সংসার মোটামুটি ভালো চলে। এদিকে তারা বাসা পরির্বতন করে চলেযান জিঞ্জিরশাহ্ মাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনীতে।

রেলওয়ে কলোনীতে আসার পর তিনি জড়িয়ে পরেন বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে। শুরু হয় কাশেমের নতুনভাবে পথচলা, জি এর কাজ ত্যাগ করেন স্ত্রীও। ২০০৫ইং সাল থেকেই সবকিছু ছেড়ে কাশেম জুয়ার ব্যবসায় মনোযোগী হোন, সঙ্গে মেয়ে জেসমিনকে রাখেন, পাশাপাশি তিনি মাদক ব্যবসা করেন। ২০০৭ ইং সালে কাশেম জিঞ্জিরশাহ মাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনীর ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ২০ ফুট প্রস্ত রেলওয়ের কাছ থেকে ৭(সাত) লক্ষ টাকায় লিজ নেন। লিজ নেওয়ার পর সেখানে গড়ে তুলেন “সুরমা মহল” নামক এক অন্ধকার রঙ্গীন আস্তানা। সেই আস্তানায় জুয়ার পাশাপাশি চলে মাদক সেবন ও বিক্রি। কারণ কাশেমের সম্মতি ছাড়া সুরমা মহলে অবৈধ মাদক বিক্রি করার সাহস কে করবে, তাই সাধারণ মানুষের ধারনা কাশেম-জেসমিন মাদক ব্যবসায় জড়িত। পরবর্তীতে কাশেম জিঞ্জিরশাহ মাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনী মার্কেটে আরও ৪ টি দোকান কোটা ২৮ লক্ষ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। শুধু তাইনা রেলওয়ে লিজের জমি থেকে আরও প্রায় ৫০ফুট অতিরিক্ত অন্য আরেক জনের লিজের জমি জোরপূর্বক ভোগদখল করছেন ক্ষমতাবলে।

স্থানীয় সুত্রে এবং অনুসন্ধানে জানাযায় দক্ষিণ সুরমার অন্ধকার রাজ্যে সুরমা মহলে দুপুর থেকে রাতভর চলে জুয়া, মাদক বিক্রি, সেবন ও সমাজ বিরোধী অনৈতিক আরও অনেক অপকর্ম। ইতিমধ্যে সুরমা মহলটি নগরবাসীর কাছে অন্ধকার জগৎ বা জুয়ার রাজ্যে নামে পরিচিতি পেলেও বন্ধ করতে পারছেনা প্রশাসন।

এই মহলে প্রকাশ্যে দিবালোকে রমরমা জুয়া ও মাদকের ব্যবসা চালিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কাশেম ও তার মেয়ে জেসমিন। তাদের অবৈধ ব্যবসা নিবিঘ্ন করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যরা

এ নিয়ে স্থানীয়রা জুয়ারীদের মূলহোতা জিঞ্জির শাহ মাজার এলাকার মৃত কালু মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম,সহ
১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ২০১৮ইং সালের ৯ জানুয়ারি সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের পর আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে অপরাধীরা। তাদের অপকর্মের পাশা-পাশি উলটো অভিযোগকারীদেরকে হুমকি-ধামকি দেয়, বাদ যায়নি সাংবাদিকও।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার জিঞ্জির শাহ মাজার এলাকায় আবুল কাশেম ও তার মেয়ে জেসমিনের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে জুয়া ও মরণ নেশা মাদকের নিরাপদ আস্তানা সুরমা মহল । সাধুরবাজার বাঁশপালা মার্কেট, জিঞ্জির শাহ মাজার সংলগ্ন এলাকায়
এই রঙ্গিন মহলে দিনেরাতে চলে মাদক বিক্রি, ভারতীয় জুয়া শিলং তীর, ঝান্ডুমান্ডু, তিন তাস নামক জুয়ার অবৈধ ব্যবসা।

প্রশাসনের গুটি কয়েক অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে কাশেম, তার মেয়ে জেসমিন এসব অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

তাদের গড়া এসব আস্তানায় স্কুল-কলেজের ছাত্র, দিনমজুর, রিকশাচালক, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জুয়া ও মাদকে আসক্ত হয়ে অনেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। ফলে একদিকে যেমন যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবীত হচ্ছে, অন্যদিকে জড়িয়ে পড়ছেন চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে।

সুরমা মহলে গড়ে তোলা অবৈধ আস্তানার বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় এলাকাবাসী একাধিক বার সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করলেও বন্ধ হচ্ছেনা অপরাধীদের কর্মকান্ড।

আবুল কাশেম ও তার মেয়ে জেসমিনের অবৈধ আস্তানা নির্বিঘ্নে চালাতে স্থানীয় প্রভাবশালী ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও হলুদ সাংবাদিকরা তাকে সহযোগিতা করছেন। (চলবে)

সংবাদটি শেয়ার করুন :





© All rights reserved © 2021 Holysylhet